২০০৯ সালের পর জাপানের ব্যবসায়িক আস্থা সর্বনিন্মে কেন ?

 

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমে গেছে। এতে ব্যবসায়ীদের আস্থা কমছে। জাপানের প্রধান উৎপাদনকারীদের আস্থা কমে ২০০৯ সালের আর্থিক মন্দার চেয়েও নিন্মে পৌঁছেছে। ব্যাংক অব জাপানের একটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর : আরব নিউজ।

গত জুনে এক প্রান্তিকের তথ্য নিয়ে চালানো ওই জরিপে ১০ হাজার কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে বড় উৎপাদনকারীদের আস্থা সূচক মাইনাস ৩৪ পয়েন্টে পৌঁছেছে। বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী আর্থিক খাতে ধাক্কা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতেও ব্যাপকভাবে পড়েছে। ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে বেশি আস্থা সংকটে ভুগছেন উৎপাদনকারীরা। ওই বছরের প্রথম দিকের পর এটি সবচেয়ে বড় প্রান্তিকীয় আস্থা পতন। গত মার্চে সূচক মাইনাস থাকলেও বিশ্লেষকরা যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, এটি তার চেয়েও অনেক বেশি।

জাপানভিত্তিক দাই-ইচি-লাইফ রিচার্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়োশিকিও শিমামিন বলেন, এ চিত্র দেখে মনে হচ্ছে, কোম্পানিগুলো বিশ্বাস করে শিগরিই এ অবস্থা থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হবে না। দীর্ঘ সময় এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে। অন্য উন্নত দেশের তুলনায় করোনাভাইরাস জাপানে খুব কমই সংক্রমণ করেছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে এক হাজারের মতো লোক মারা গেছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ১৯ হাজার।

প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুই ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকে ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার দেশটির নাগরিকদের দেওয়া হয়েছে। বেড়েছে দেশটির বেকারত্বও। গত মঙ্গলবার প্রকাশি প্রতিবেদনে দেখা গেছে বেকারত্ব বেড়ে দুই দশমিক ছয় শতাংশ থেকে বেড়ে দুই দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছেছে।যদিও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেকারত্বের হার সন্তোসজনক। 

গত মে মাসে জাপানের ভোক্তা আস্থা রেকর্ড সর্বনিন্মের কাছাকাছি পৌঁছায়। দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার হলেও নভেল করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব যে এখনও অর্থনীতিতে রয়ে গেছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ভোক্তা আস্থার উপাত্তে।

দুই বা ততোধিক সদস্যবিশিষ্ট জাপানের খানাগুলোয় গত মে মাসের  মৌসুমভিত্তিক সমন্বিত ভোক্তা আস্থা সূচক ২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা গত এপ্রিলের রেকর্ড সর্বনিন্ম ২১ দশমিক ছয় পয়েন্ট থেকে কিছুটা বেশি। গত মাসে ভোক্তা আস্থায় কিছুটা উন্নতি হলেও ২০০৪ সালের এপ্রিলের পর তা দ্বিতীয় সর্বনিন্ম। সর্বশেষ বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের জেরে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ভোক্তা আস্থা দাঁড়িয়েছিল ২৭ দশমিক পাঁচ পয়েন্ট। এ সূচকটির মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে ভোক্তাদের অর্থনৈতিক প্রত্যাশার আভাস মেলে। ৫০ পয়েন্টের নিচের রিডিংয়ে আশাবাদের চেয়ে নৈরাশ্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ